Ticker

6/recent/ticker-posts

হাবির জানাজায় ৭০ হাজার ফেরেশতা অংশগ্রহণ: যে আমলের কারণে এই মহাফজিলত

 





ইসলামের ইতিহাসে সাহাবিরা হলেন উম্মতের শ্রেষ্ঠতম প্রজন্ম, যারা সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসুল, মুহাম্মদ (সা.)-কে দেখে ঈমান এনেছিলেন। এই সৌভাগ্যবানদের জীবন জুড়ে ছিল আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও পবিত্র কুরআনের প্রতি অপরিমেয় ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেই কুরআনুল কারিমের একটি বিশেষ সুরা তাঁদের কাছে ছিল অত্যন্ত প্রিয়—তা হলো সুরা ইখলাস।


পবিত্র কুরআনের ১১২তম এই সুরাটি আয়তনে ছোট হলেও এর ফজিলত বিশাল। মক্কায় অবতীর্ণ, মাত্র চার আয়াতের এই সুরাটি হলো মহান আল্লাহর একত্ববাদ (তাওহিদ)-এর এমন এক অনুপম ঘোষণা, যা তাঁর সত্তা ও অস্তিত্বের নিখুঁত ব্যাখ্যা প্রদান করে এবং সন্তান থাকার ভ্রান্ত ধারণা থেকে তাঁকে মুক্ত করে। বলা যায়, এই সুরা মুখস্থ নেই এমন মুসলমান খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।


পবিত্র কোরআনের অন্যতম ছোট সুরা হিসেবেও বিবেচিত হয় এ সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর রুকু ১, আয়াত ৪। ১১২তম সুরা। এ সুরায় মহান আল্লাহর অস্তিত্ব ও সত্তার অনুপম ব্যাখ্যা রয়েছে।


হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক সাহাবিকে একটি মুজাহিদ দলের প্রধান করে অভিযানে পাঠালেন। নামাজে তিনি যখন তার সাথীদের নিয়ে ইমামতি করতেন, তখন ইখলাস সুরাটি দিয়ে নামাজ শেষ করতেন। তারা যখন অভিযান থেকে ফিরে এলেন তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে ব্যাপারটি আলোচনা করলেন।


নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাকেই জিজ্ঞেস কর কেন তিনি এ কাজ করেছেন? এরপর তারা তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিলেন, এ সুরাটিতে মহান আল্লাহর গুণাবলি রয়েছে। এজন্য সুরাটি পড়তে আমি ভালোবাসি। তখন নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। (বুখারি: ৭৩৭৫)


বেশি বেশি সুরা ইখলাস তেলাওয়াত যে কতটা ফজিলতপূর্ণ, তা এক সাহাবির ইন্তেকালের ঘটনা থেকে আরো স্পষ্ট হয়ে যায়। নিয়মিত সুরা ইখলাস তেলাওয়াতকারী এক সাহাবি ইন্তেকাল করলে মহান আল্লাহ জিবরাইল (আ.)-এর নেতৃত্বে ৭০ হাজার ফেরেশতাকে তার জানাজায় শরিক হতে পাঠান।


হজরত মুয়াবিয়া ইবনে মুয়াবিয়া আলমুযানি আললাইছি (রা.) ইন্তেকাল করলে ৭০ হাজার ফেরেশতাসহ জিবরাইল (আ.) নবীজির কাছে আগমন করেন। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরাইল (আ.) এবং এসব ফেরেশতাদের নিয়ে তার জানাজায় শরিক হন। নামাজ শেষ হলে নবীজি জিবরাইল (আ.)-কে জিজ্ঞেস করেন, হে জিবরাইল! কোন আমলের মাধ্যমে মুয়াবিয়া ইবনে মুয়াবিয়া মুযানি এ উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়েছে? জবাবে জিবরাইল (আ.) বলেন, এ মর্যাদা লাভের কারণ হলো, সে দাঁড়িয়ে, বসে, হেঁটে হেঁটে, সওয়ারিতে (বাহনে চড়া অবস্থায়) তথা সর্বাবস্থায় সুরা ইখলাস তেলাওয়াত করত। (মুজামে কাবির: ৮/১১৬, হাদিস ৭৫৩৭; মুজামে আওসাত, তবারানি)

Post a Comment

0 Comments